ভৌত রাশি
ভৌত জগৎ বা জড় জগৎ (physical world) বলতে সাধারণভাবে ভর ও শক্তির সমন্বয়ে যা কিছু তা বোঝায়। যেমন অণু-পরমাণু, চেয়ার-টেবিল, গ্রহ-নক্ষত্র, আলো, তাপ, বিদ্যুৎ এরকম বিভিন্ন উদাহরণ আমরা আনতে পারি
এর বিপরীতে নীতি-নৈতিকতা, নন্দনতত্ত্ব, যুক্তিবিদ্যা, আবেগ-অনুভূতি প্রভৃতি ভৌত জগতের অন্তর্ভুক্ত হবে না।
ভৌত জগতের ধারণা বোঝার পর আমরা রাশির ধারণা বোঝার চেষ্টা করি। ভৌত জগতে যা কিছু পরিমাপ করা যায় তাকে রাশি (quantity) বলে। যেমন একটা বাক্সের আয়তন, একটা চেয়ারের ভর, একটা গাড়ির গতি, কোন স্থানের তাপমাত্রা প্রভৃতি।
এখনকার সময়ের বিজ্ঞান ও গবেষণা অনেক বেশি পরিমাপনির্ভর। যেমন ধরা যাক আমরা একটা গাড়ির ইঞ্জিন উন্নত করার চেষ্টা করছি, আমাদের পরিমাপ করতে হবে তা কতটা জ্বালানি খরচ করছে, কত দ্রুত এবং সর্বোচ্চ কত গতি তুলতে পারছে প্রভৃতি। আমরা যখন পদার্থবিজ্ঞান পড়বো, আমরা আসলে দেখবো এটা অনেক বেশি গাণিতিক, এবং পরিমাপ এখানে একদমই অবিচ্ছেদ্য। যেকারণে আমরা পদার্থবিজ্ঞানের শুরুটা সাধারণত ভৌত রাশি, একক, মাত্রা এই ধারণাগুলো থেকে শুরু করি।
মৌলিক রাশি ও লদ্ধ রাশি
রাশির অগণিত উদাহরণ দেয়া যায়, দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা, ক্ষেত্রফল, আয়তন, ওজন, তাপমাত্রা, কাঠিন্য, অবস্থান, বেগ, উপাদান, স্থিতিস্থাপকতা, তাপ পরিবাহিতা, অপরিবাহিতা, ঘনত্ব, তাপ, চাপ, গলনাঙ্ক, স্ফূটনাঙ্ক,… এবং আরো অনেক। কিন্তু মজার একটা বিষয় হলো মাত্র ৭টি রাশি ব্যবহার করেই সব রাশি পাওয়া সম্ভব। এই ৭টি রাশিকে মৌলিক রাশি বলে। একাধিক মৌলিক রাশির সমন্বয়ে লদ্ধ রাশি পাওয়া যায়।
মৌলিক রাশি: যেসকল রাশি স্বাধীন বা নিরপেক্ষ অর্থাৎ, অন্য কোন রাশির ওপর নির্ভরশীল নয়, সেগুলো মৌলিক রাশি। মৌলিক রাশিগুলো হলো- দৈর্ঘ্য, ভর, সময়, বৈদ্যুতিক প্রবাহ, তাপমাত্রা, পদার্থের পরিমাণ, দীপন তীব্রতা।
লদ্ধ রাশি: মৌলিক রাশির ওপর নির্ভর করে আরো রাশি গঠন করা হলে তাদেরকে লদ্ধ রাশি বলে। মৌলিক রাশি ছাড়া সব রাশিই লদ্ধ রাশি।