বিজ্ঞান পড়ার সময় স্বীকার্য, অনুকল্প, তত্ত্ব, নীতি প্রভৃতি শব্দগুলোর সাথে প্রায়শই দেখা হবে। তাই এদের অর্থ জেনে নেয়া ভালো।

কোন কিছু দিয়ে কী নির্দেশ করা হয় তা নির্ধারণের জন্য এর সংজ্ঞা বা Definition দেয়া হয়। মূলত একটা শব্দের সংজ্ঞা কীভাবে দেয়া হচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করবে সেই শব্দ দিয়ে আমরা কী বোঝাতে চাই। অনেক সময়ই সংজ্ঞা নিয়ে অস্পষ্টতা থাকলে তাতে বিভ্রান্তি সৃষ্টির জায়গা থাকে। বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানের প্রয়োগক্ষেত্রের আলোচনায় সংজ্ঞার গুরুত্বের একটা উদাহরণ আমরা দেখেছি।

স্বীকার্য বা Axiom বা Postulate হলো এমন কোন কথা যা সত্য হিসেবে স্বীকার করে নেয়া হয়। স্বীকার্য মূলত স্বতঃসিদ্ধ, একে প্রমাণ করা হয় না। যেমন ধরা যাক, আমি দুইবার তিন লিখলাম- 3, 3। এই দুইটা 3 এর মান সমান, এটা আমি কীভাবে প্রমাণ করব? সিম্পল, আমরা এটা প্রমাণের চেষ্টা করব না, আমরা মেনে নিব যে এই দুটো তিন সমান।

অনুকল্প বা Hypothesis হলো একটি প্রস্তাবিত ব্যাখ্যা। হাইপোথিসিস মূলত কোন গবেষণার ভিত্তি তৈরি করে, অর্থাৎ গবেষণা করে আমরা দেখি প্রস্তাবিত কোন হাইপোথিসিস সঠিক কিনা।

তত্ত্ব বা Theory হলো বৈজ্ঞানিক পরীক্ষণের মাধ্যমে উপনীত হওয়া এমন ব্যাখ্যা যা নির্দিষ্ট শর্তগুলো অনুসরণ করে পুনরায় পরীক্ষা করে যাচাই করা সম্ভব। যখন কোন ঘটনা পরীক্ষিতভাবে নির্দিষ্ট শর্তের উপস্থিতিতে প্রতিবার পুনরাবৃত্তি হয়, তখন তার বৈজ্ঞানিক আকারে প্রকাশিত রূপকে Law বা সূত্র বলে। পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন পড়ার সময়ে বিভিন্ন সূত্র আমাদের সামনে আসবে।

প্রসঙ্গত, বাংলা ভাষায় সূত্র শব্দটি Mathemetical Formula বোঝাতেও ব্যবহার হয়। যেমন আয়তক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের সূত্র হলো ক্ষেত্রফল = দৈর্ঘ্য × প্রস্থ।

নীতি বা Principle হলো প্রকৃতির অনিবার্য নিয়ম। যেমন শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতি অনুযায়ী শক্তির সৃষ্টি বা বিনাশ নেই, শুধু রূপান্তর আছে। অনেক সময় নীতি সরাসরি প্রমাণ করা সম্ভব হয় না, পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে উপনীত হওয়া যায়।