- প্রথম অধ্যায় (রসায়নের ধারণা) – রসায়নের ক্রমবিকাশ
- প্রথম অধ্যায় (রসায়নের ধারণা) – রসায়ন পাঠের গুরুত্ব
- প্রথম অধ্যায় (রসায়নের ধারণা) – রসায়নের পরিসর
- প্রথম অধ্যায় (রসায়নের ধারণা) – বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার সাথে সম্পর্ক
- প্রথম অধ্যায় (রসায়নের ধারণা) – রসায়নে গবেষণা প্রক্রিয়া
- প্রথম অধ্যায় (রসায়নের ধারণা) –পরীক্ষাগার ও রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারে সতর্কতা
- দ্বিতীয় অধ্যায় (পদার্থের অবস্থা) – কণার গতিতত্ত্ব ও পদার্থের ভৌত অবস্থা
- নবম অধ্যায় (এসিড-ক্ষারক সমতা) – এসিড, ক্ষারক ও ক্ষারের ধারণা
- নবম অধ্যায় (এসিড-ক্ষারক সমতা) – জলীয় দ্রবণে এসিড ও ক্ষারের আচরণ
- নবম অধ্যায় (এসিড-ক্ষারক সমতা) – প্রশমন বিক্রিয়া ও লবণ
- নবম অধ্যায় (এসিড-ক্ষারক সমতা) – লঘু এসিডের শনাক্তকারী ধর্মসমূহ ও পরীক্ষামূলক প্রমাণ
প্রতিনিয়ত আমরা দেখি প্রকৃতিতে বিভিন্ন ঘটনা সবসময় একইরকম হয়। গবেষণাগারে বিভিন্ন পরীক্ষণ সবকিছু ঠিকঠাকভাবে পুনরাবৃত্তি করলে একই ফলাফল পাওয়া যায়। বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করেন এই ঘটনাগুলোকে ব্যাখ্যা করতে। তত্ত্ব হলো কোন ঘটনার একটা ব্যাখ্যা যা আমাদের পর্যবেক্ষণের সাথে মিলে। পরবর্তীতে যদি অন্য কোন পর্যবেক্ষণ আগের তত্ত্বের সাথে না মিলে তখন আমাদের নতুন করে ভাবতে হয়। অর্থাৎ, তত্ত্বকে চূড়ান্ত সত্য মনে করে নেয়া যায় না। তবে বিভিন্ন তত্ত্বের সাহায্যে প্রকৃতির আচরণকে অনেকাংশে বোঝা যায়।
যেমন কণার গতিতত্ত্ব নিয়ে আমরা জানবো এখানে। আমরা তো জানি যে, সকল পদার্থের গঠনে রয়েছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা- যেমন পরমাণু, অণু ও আয়ন। কণার গতিতত্ত্ব এরকম কণাগুলোর আচরণ নিয়ে কথা বলে। আমাদের সবচেয়ে শক্তিশালী মাইক্রোস্কোপেরও সীমাবদ্ধতা আছে সূক্ষ্মভাবে এই কণাগুলোর আচরণ পর্যবেক্ষণ করার। কিন্তু আমরা বাইরে থেকে পদার্থের যে বৈশিষ্ট্য দেখি, তার ভিত্তিতে আমরা কণাগুলোর আচরণ ধারণা করার চেষ্টা করতে পারি।
কণার গতিতত্ত্ব
কণার গতিতত্ত্ব: কণার গতিতত্ত্বে বলা হয়েছে পদার্থের কণাগুলো সর্বদা গতিশীল থাকে এবং কণাগুলোর মধ্যে আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি রয়েছে।
আমরা পদার্থের তিনটি ভৌত অবস্থা সম্পর্কে জানি- কঠিন, তরল ও গ্যাসীয়। তাপ প্রদানের সাথে আমরা কঠিন পদার্থকে তরল এবং আরো তাপ প্রদানের সাথে তরল পদার্থকে গ্যাসীয় পদার্থে পরিণত হতে দেখি। পদার্থের ভৌত অবস্থার এই পরিবর্তনকে কণার গতিতত্ত্ব দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়।
আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি
বেশ কিছু বলের প্রভাবে পদার্থের কণাগুলোর মধ্যে আকর্ষণ শক্তি বিরাজ করে। কণাগুলো যত কাছাকাছি থাকবে, আকর্ষণ তত বেশি কাজ করবে এবং যত দূরে যাবে, আকর্ষণ তত কমতে থাকবে।
তাপশক্তি ও গতিশক্তির সম্পর্ক
শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতি থেকে আমরা জানি শক্তির সৃষ্টি বা ধ্বংস নেই, শুধু রূপান্তর আছে। অর্থাৎ তাপশক্তি গতিশক্তিতে বা গতিশক্তি তাপশক্তিতে রূপান্তর হতে পারে। কোন পদার্থে যদি তাপ দেয়া হয়, তবে এই শক্তি পদার্থের কণাগুলোর গতিশক্তি বৃদ্ধি করে। আবার কণাগুলোর গতিশক্তি অন্য বস্তুর সংস্পর্শে আসলে তাপশক্তি হিসেবে স্থানান্তর হয়।
পদার্থের কঠিন অবস্থা
কঠিন অবস্থায় পদার্থের কণাগুলো সবচেয়ে কাছাকাছি ঘন সন্নিবিষ্ট অবস্থায় থাকে। এই অবস্থায় কণাগুলো নিজের অবস্থান থেকে নড়াচড়া করতে পারে না, তবে নিজের জায়গায় থেকে সামান্য কাঁপতে থাকে। একারণে এই অবস্থায় পদার্থের আকৃতি ও আয়তন নির্দিষ্ট থাকে।
তরল অবস্থা
কঠিন পদার্থকে যখন তাপ দেয়া হয়, তখন কণাগুলোর গতিশক্তি বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব বৃদ্ধি পায় এবং আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি কম কাজ করে। একারণে এ অবস্থায় পদার্থের আকৃতি পরিবর্তন হতে পারে। তবে এতটুকু আকর্ষণ শক্তি থাকে যে পদার্থ একটা নির্দিষ্ট আয়তন ধরে রাখে।
গ্যাসীয় অবস্থা
আরো তাপ দেয়া হলে কণাগুলোর গতিশক্তি আরো বৃদ্ধি পায়। ফলে পদার্থগুলো এত দূরে দূরে চলে যায় যে আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি থেকে প্রায় মুক্ত হয়ে যায়। ফলে কণাগুলো স্বাধীনভাবে ছোটাছুটি করতে পারে। তাই এসময় আকার বা আকৃতি কোনটাই নির্দিষ্ট থাকে না। যে পাত্রে রাখা হয় পুরো পাত্রজুড়ে কণাগুলো ছোটাছুটি করে এবং পুরো পাত্রের আয়তন দখল করে।
